শহর থেকে ১৭
কিলোমিটার
উত্তরে শিবপুর উপজেলার যোশর বাজারের শ্রীশ্রী গোপীনাথ জিউর আখড়া
ধাম।
নরসিংদী অতীতে
হিন্দুপ্রধান এলাকা ছিল।
সেই হিসেবে এ
জেলায় অনেক
প্রাচীন মন্দির রয়েছে।
সেসব মন্দিরের
অধিকাংশরই অবস্থা এখন জরাজীর্ণ।
তারপরও ইতিহাস
রক্ষায় এই মন্দিরগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।
নরসিংদীর
শিবপুর
উপজেলার যোশর গ্রাম।
এটা কিন্তু
যশোর না যোশর।
এটি নরসিংদীর
একটি প্রাচীন
জনপদ।
৭৭০ বছরের
প্রাচীন এই মন্দিরটার নাম শ্রীশ্রী গোপীনাথ জিউর আখড়া।
এই
মন্দিরটি
প্রথম নির্মাণ কে করেছিলেন তা জানা যায়নি।
আখড়াটির ভেতর
ও বাইরে
মোট ৬টি মন্দির আছে।
বাইরের দুটি
মন্দিরের মধ্যে একটি একেবারে ধ্বংস হয়ে
গেছে।
শ্রীশ্রী গোপীনাথ
জিউর আখড়াটি প্রায় ৭ কানি জায়গাজুড়ে অবস্থিত।
ভেতরে যে
চারটি মন্দির আছে তার মধ্যে রাধাকৃষ্ণ ও বলরাম দেবতার মন্দিরটি
প্রধান।
তাছাড়া
বর্তমানে যে গোপীনাথের মন্দিরে পুজো দেয়া হয় সেটির
প্রতিষ্ঠাতা
এক সন্ন্যাসী নিধিরাম বাবাজির সমাধিও আছে মন্দিরের পাশাপাশি।
প্রাচীন
এই
মন্দিরগুলোর গায়ে নকশা ও মূর্তি আঁকা আছে।
সেই মূর্তির
মধ্যে দুজন
দারোয়ানের বৃহৎ
মূর্তি আছে।
কিন্তু এই দুই
দারোয়ানে মন্দিরের রুপার বাঁশি,
মাথার ছড়াসহ দেবতার
মূল্যবান অলঙ্কার,
শঙ্খ,
বেল,
কাঁসাসহ মূল্যবান সবই
চুরি
হওয়া
থেকে
ঠেকাতে
পারেনি।
অনেক আগেই
ভগবানের নিম কাঠের প্রাচীন
মূর্তিটি চুরি হয়ে
গেছে।
এই তো দু’বছর
আগেও মন্দিরের চূড়া থেকে কলসিটি
চুরি হয়ে গেল।
এখানে পুরো
মন্দিরটি একে একে চুরি হয়ে যাওয়ার আগেই পারলে
দেখে যান
প্রাচীন শ্রীশ্রী
গোপীনাথ জিউর আখড়া ধাম।
মহামায়া আশ্রমটি কে
প্রতিষ্ঠা
করেছেন তা জানা যায়নি।
তবে এটার
প্রতিষ্ঠাকাল বাংলা ৭০৭ সাল।
সেই হিসেবে এর
বয়স হয়েছে ৭শ বছরেরও বেশি।
মনোহরদী
উপজেলার বরচাপা ইউনিয়নের
গণকপুর বিলের ধারে এই
মহামায়া আশ্রমে প্রতি বছর বৈশাখ মাসের ১ তারিখ থেকে
৭ দিন
মহাধুমধামে পূজার্চনা হয় এবং সেই উপলক্ষে বিশাল মেলা বসে।
শুধু মেলা
বা পূজার
জন্যই না, এই
আশ্রমের সঙ্গে গণকপুর বিলটিও বিখ্যাত তার
কল্পকাহিনীর
জন্য।
এই বিলের পানি পবিত্র
এবং সর্বরোগের মহৌষধ।
প্রাকৃতিক
সৌন্দর্যের
বিচারেও এটি প্রথম সারির দাবিদার।
গণকপুর বিলের
পানি কখনো
শুকায় না।
এ বিলের মাছ
দারুণ সুস্বাদু।
এখানে পলো
দিয়ে মাছ ধরা একসময়
ঐতিহ্যগত উৎসব
ছিল।
এখানেই রয়েছে সেই
গণকপুর বিলের ধারের মহামায়া আশ্রম।
শহর
থেকে ১৩
কিলোমিটার উত্তরে শিবপুর উপজেলার কুন্দারপার এলাকা।
এখানে রয়েছে
লাল মাটির ছোট
ছোট অনেক টিলা।
এগুলোর নাম
সোনাইমুরি টেক।
ঢাকা-সিলেট
মহাসড়কের
নরসিংদীর এই স্থানে টিলা কেটে রাস্তা বানানো হয়েছে।
তাই খেয়াল
করলেই এই লাল
টিলাগুলো দেখতে পাবেন।
বর্তমানে এই
টিলাগুলোকে ঘিরে পর্যটনের
সুযোগ-সুবিধা দেয়ার
চেষ্টা চলছে।
তাই এই টেকের
নাম এখন সোনাইমুরি বিনোদন
পার্ক।
নরসিংদীর একমাত্র
সবেধন নীলমণি।
এখানের মাটি
টকটকে লাল।
সঙ্গে
উঁচুনিচু বুনো
পায়ে হাঁটা পথ।
ছুটির দিনে
সোনাইমুরি টেকে শহরের মানুষ
বেড়াতে আসে।
ঈদ বা পুজোর
ছুটিতে এখানে চরম হইহুল্লোড় হয়।
তবে পার্ক
হিসেবে
এখানে তেমন কোনো কিছু
এখনো গড়ে ওঠেনি।
তাই,
পরিবেশ ঠিক রেখে
রুচির পরিচয়
দেয়ার সময় এখনো হাতে
রয়েছে।
পার্ক কর্তৃপক্ষ
বিষয়টি অবশ্যই ভেবে দেখবেন।
নরসিংদী
বেড়াতে এলে আপনিও বেড়িয়ে যান এই সোনাইমুরি টেক থেকে।
নরসিংদী
শহর থেকে ২৬
কিলোমিটার উত্তরে মনোহরদী উপজেলার ডোমনামারা গ্রাম।
এখানে
আছে
সৈয়দ দোস্ত মাহামুদ
(র.) এর মাজার।
নাম দোস্ত
মাহামুদ হলেও এই ওলি
ব্যক্তি সাধারণের
কাছে ধরা দিতেন না।
পাগলাটে
স্বভাবের।
তিনি কখনো
কখনো
গাছে ঝুলে বা চিকন
ডালে নির্বিকার দাঁড়িয়ে থাকতেন।
দোস্ত
মাহামুদের
মাজারটি আনুমানিক ৪শ
বছরের পুরনো।
ধারণা করা হয়
তিনি বাগদাদ থেকে
এসেছিলেন।
প্রতিবছর মাঘ
মাসের প্রথম সোমবার উরস ও মঙ্গল থেকে বৃহস্পতি
তিনদিন জমজমাট
মেলা বসে।
|